ইতালি’তে ট্রাকে ভরে সারি বদ্ধ’ভাবে পড়ে আছে বহু লাশ। বি’ভিন্ন প্রান্ত থেকে সে’খানে আনা হচ্ছে আরও লাশ। এসব লাশ ভস্মী’ভূত ও দা ফন সম্পন্ন কর’তেই হিম’শিম খাচ্ছে কর্তৃ’পক্ষ। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাশ’গুলো ট্রাকে ভরে আনছেন সেনা’বাহিনীর সদস্য’রা। এমন’ই পরিস্থিতি বিরাজ করছে ইতালি’তে।
আন্ত’র্জাতিক সংবাদ’মাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, বিশ্ব’ব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরা’সে এ পর্যন্ত মৃ ত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়ে’ছে ইতালি। চীনে প্রথম এই ভাই’রাস ধরা পড়লেও তারা করো’নার চিকিৎসার জন্য স্থাপিত সর্বশেষ হাস পাতাল’টিও বন্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু ভাইরাস’টি এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা বিশ্বে।
ইতালি’র উত্তরা’ঞ্চলীয় শহর লম্বার্ডিয়া এখন মৃত্যু’পুরী। স্বজনদের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কবর’স্থান গুলো’তেও মানুষ প্রবেশ করতে পারছেন না। দেশটি’তে করোনা ভাইরা’সে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ২ হাজার লোকের মধ্যে অর্ধেকের’ও বেশি লম্বা’র্ডিয়া অঞ্চলের।
মিলা’নে মারা যাওয়া মানুষে’র লাশ আর লাশ, মর্গেও জায়’গা নেই। মিলান আর লম্বা’র্ডিয়ায় হাস’পাতাল ও বিশ্রামা’গারে দিনরাত স্বজনদের ডাকা’ডাকি। কফিন’গুলো তাৎক্ষণিক’ভাবে সরিয়ে নিতে হচ্ছে।
আত্মীয়স্বজন’রা তাদের প্রিয়জন’দের মুখটি শেষ’বারের মতো দেখতে যেতে পারছেন না। ম্যাসি’মো সেরাতো মিলানের অন্য’তম বৃহত্তম ফিউনা’রেল সংস্থার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন এমন ভ’য়ানক অবস্থা আমরা জীবনে কল্পনা’ও করিনি। এ যেন এক মৃত্যু’পুরী।
ইউরোপে’র পর্যটন’সমৃদ্ধ দেশটি যেন এক মৃত্যু উপত্য’কায় পরিণত হয়েছে। করোনা ভাইরা’সে গত ২৪ ঘণ্টা’য় নতুন করে আরও ৩৪৫ জনে’র মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটি’তে মৃত্যু’র সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ৫০৩ জনে।
করোনা’য় নতুন করে ৩ হাজার ৫২৬ জন’সহ মোট আ’ক্রান্ত হয়েছে ৩১ হাজার ৫০৬ জন। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৪১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে’ছেন।
বর্তমা’নে ২৬ হাজার ৬২ জন আক্রা’ন্ত রোগী রয়েছেন। তা’দের মধ্যে ২৪ হাজার ২ জনের অবস্থা সাধা’রণ এবং বাকি ২ হাজার ৬০ জনের অবস্থা আশঙ্কা’জনক।
আক্রান্তে’র অনুপাতে মৃত্যুর হার ৪৬ শতাংশ এবং সুস্থতা’র হার ৫৪ শতাংশ। দেশটি’তে নারীদের তুলনায় পুরুষ বেশি মারা যা’চ্ছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু’র হার নারী ৩৮ শতাংশ, পুরুষ ৬২ শতাংশ।
অন্য’দিকে ইতালির প্রধান’মন্ত্রী জিউসেপ্পে কন্তে করোনা সমস্যা উত্তরণে বিভিন্ন পদ’ক্ষেপ নিচ্ছেন। এর মধ্যে প্রায় ২৫ বিলিয়’ন ইউরো ছাড় করেছেন, যা দিয়ে চিকিৎ সক, স্বাস্থ্য’কর্মী, নাগরিক পরি’ষেবা এবং ব্যবসার কাজে সহা’য়তা করা হবে।
এ ছাড়া মঙ্গল’বার নতুন একটি হাস’পাতাল তৈরির পরিকল্প’নায় নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের প্রধান বার্তো’লাসো মিলানো যান। উল্লেখ্য চীনে করোনা ভাইরা’স প্রায় নিয়ন্ত্র’ণে চলে এসেছে। কিন্তু চীনে’র বাইরে অন্য দেশে ব্যাপক আকারে বাড়ছে আক্রা’ন্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এতে বিশ্বব্যাপী প্রচণ্ড আ তঙ্ক ও ভ য়ের সৃষ্টি হয়েছে।
করোনা ভাইরা’সে এ পর্যন্ত সারা’বিশ্বে মারা গেছে ৭ হাজার ৯৮০ জন, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারিয়েছে ৮১৯ জন। এর মধ্যে উৎপত্তিস্থল চীনে মৃ ত্যুর সংখ্যা ৩ হাজার ২৩৭। চীনের বাই’রে মারা গেছে ৪ হাজার ৭৪৩ জন।
এ ভাইরা’সে বিশ্ব’জুড়ে মোট আক্রা’ন্ত হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৪৯ জন। এর মধ্যে ৮২ হাজার ৭৬৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে’ছেন। চীনে আক্রান্তে’র সংখ্যা ৮০ হাজার ৮৯৪। দেশটি’তে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফি’রেছেন ৬৯ হাজার ৬১৪ জন। এ ছাড়া চীনে’র বাইরে আক্রান্তে’র সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৫ জন মানুষ।
বর্ত’মানে ১ লাখ ৭ হাজার ৬০৬ জন আক্রা’ন্ত রোগী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ১ হাজার ১৯০ জনে’র অবস্থা সাধারণ এবং বাকি ৬ হাজার ৪১৪ জনের অবস্থা আশঙ্কা’জনক। আক্রান্তে’র অনু’পাতে মৃত্যুর হার ৯ শতাংশ ও সুস্থতা’র হার ৯১ শতাংশ।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য’সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়সুস অস’ন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকার’গুলো এই বৈশ্বিক মহা’মারী ঠেকাতে যথেষ্ট পদ’ক্ষেপ নিচ্ছে না।
তিনি সরকার গুলো’কে নিজ নিজ দেশের করোনা ভাইরাস পরীক্ষা’র ব্যবস্থা আরও বাড়ানো’র ওপর জোর দিয়েছেন। এখন পর্য’ন্ত বিশ্বের ১৬৫ দেশে করোনা ভাইরা’সে আক্রান্ত রোগী শনা’ক্ত হয়েছে।